Please note that Tapas no longer supports Internet Explorer.
We recommend upgrading to the latest Microsoft Edge, Google Chrome, or Firefox.
Home
Comics
Novels
Community
Mature
More
Help Discord Forums Newsfeed Contact Merch Shop
Publish
Home
Comics
Novels
Community
Mature
More
Help Discord Forums Newsfeed Contact Merch Shop
__anonymous__
__anonymous__
0
  • Publish
  • Ink shop
  • Redeem code
  • Settings
  • Log out

ফেক্টরিয়াল জিরো

আমি পৃথিবী থেকে এসেছি [4-5]

আমি পৃথিবী থেকে এসেছি [4-5]

Aug 24, 2021

৪

রিতি আলোটা দেখার পর অনেকক্ষণ সেটা নিয়ে চিন্তা করলো। জানালার বাইরে একটা মেহগনি গাছের ডাল বাতাসে দোল খাচ্ছে। সে এসব চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে পরলো।
রিতি স্বপ্ন দেখছে, আকাশ থেকে একটা তারা পৃথিবীর মাটিতে এসে পরেছে। সে তারাটিকে জিজ্ঞেস করছে- “তুমি কোথা থেকে এসেছ?”
“আমি আকাশ থেকে এসেছি তোমাকে নিয়ে যেতে। আমার সঙ্গে যাবে?”
“কিন্তু আমার মা?”
“তোমার মা কি তোমাকে ছাড়াই সুখে নেই?”
“হ্যা, আছে।”
“তাহলে চল আমার সাথে।”
তারপর তারাটি তার হাত ধরে। তারা আকাশে উড়ে উপরের দিকে যেতে থাকে। আর তার মা কাদতে থাকে আর বলতে থাকে- “ফিরে এসো মা। আমি তোমাকে অনেক নিস করছি রিতি। আমাকে ছেড়ে যেও নামা।”
তারপর তার মায়ের চোখের পানি দিয়ে পুরো পৃথিবী ডুবে গেলো। তারপর পুরো পৃথিবী একটি মুখ হয়ে গেল আর তাকে বলতে লাগলো- “রিতি আমাকে বাচাও, রিতি… “আর তখন তার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।

এ সময় পৃথিবীর অন্য প্রান্তে, “প্রফেসর জেন্ট আপনি এসব কি বলছেন? এলিয়েনরা পৃথিবীতে এসেছে আর আমরা সেটা টের পাব না, সেটা হয় নাকি?”- কিংব নামের নেমপ্লেটধারী সাদা এপ্রোন পরিহিত একটা লোক বলল।
“আমি যা বলছি তা ১০০% সত্য। আমি এটা উপোলব্ধি করছি- তারা শান্তি প্রকাশের জন্য এসেছে।”
“আচ্ছা, প্রফেসর সাহেব বলুন তো আমরা এটা কেন উপলব্ধি করতে পারছি না? তারা চুরি করে প্লানেটে ঢুকেছে এর মানে এই না এরা কোন প্সাই?”- জেন্ট ফাইল থেকে কয়েকটা ছবি বের করলো। তারপর সবার দিকে ছুড়ে দিল। দেখুন আপনারা।
ছবিতে কি আছে?
ছবিতে যে আলো আপনারা দেখছেন সেটা কোন সাধারণ আলো নয়। এ আলো পৃথিবীতে এসেই দৃশ্যমান হয়েছে। এর আগে নয়।
“আপনি কীভাবে বলতে পারেন?”- কিংব বলল।
“আমি যা বলছি মন দিয়ে শুনুন।”
“আপনি একটু চুপ করেন। এসব আবল-তাবল কথা বললে আমরা সভা ত্যাগ করতে বাধ্য হব।”– চুল খাড়া, দাড়ীওয়ালা ক্রেন বলল।
“আপনার কথার আর কোন প্রমান আছে?”- মটু প্রফেসার বলল।
“কেন, ছবি কী যথেষ্ট নয়।”
“না। শুধু ছবি যথেষ্ট নয়।”– এ কথা শুনে ক্লেন তার হেন্ড ব্যাগ থেকেকিছু এনালাইসিস পেপার বের করল।”
বাকিরা পেপার পড়ে হা করে থাকল কিছুক্ষণ।
“আচ্ছা, আপনি এর দায়িত্তে থাকবেন। আপনার সাথে আমাদের রিসার্চ ডিপার্টমেন্টের লোক থাকবে। তবে কাজ খুব গোপনে করতে হবে। “
“আপনারা কোন চিন্তা করবেন না। আমার উপর সব ছেড়ে দেন।”- জেন্ট দীর্ঘ নিস্বাস ফেলল।

জেন্ট বাড়িতে এসেছেন। অনেকক্ষণ ধরে দরজায় কড়া নাড়ছেন, কিন্তু তার স্ত্রী দরজা খুলছেন না। মাঝে মাঝে এরুপ হয়। মনে হয় তার স্ত্রী তাকে রেখেই গোসল সেরে ফেলেছে। যা, আজকের সব মজাই গেছে। প্রায় ১৫ মিনিট পর তার স্ত্রী দরজা খুলল। প্রায় বলতে হল কারন প্রফেসরের হাতের ঘড়ি ছিনতাই হয়ে গেছে। তার স্ত্রী বলল- তুমি ফ্রেশ হও, আমি তোমার জন্যে কফি বানিয়ে আনছি।
প্রফেসর সাহেব উদাম গায়ে খাটের উপর বসে আছেন। তার স্ত্রী ভোমরা মুখে ঘরে প্রবেশ করলেন। দুহাতে দুকাপ নিয়ে এসে এক কাপ তার স্বামীকে দিলেন আর এক কাপে নিজে চুমুক দিলেন।
“কবে আসবে?”- তার স্রী তাকে জিজ্ঞাস করল।
“আসবো মানে, তুমিও আমার সাথে যাবে।”
“ঠিক আছে। তবে তুমি তো জানো আমি চার দেয়ালের ভিতর থাকতে পছন্দ করি।”
তার স্ত্রী এত সহজে রাজি হবেন তিনি তা ভাবতে পারেন নি। তিনি উত্তেজনা নিয়ে বলল- “তুমি জেনে অবাক হবে আমি কোন দেশে যাচ্ছি।”
“এতে অবাক হওয়ার কী আছে?”
“আছে। দেশটির নাম- বাংলাদেশ।”
তার স্ত্রি সত্যিই অবাক হল। তারপর কতক্ষণ হা করে থাকলেন নিজের স্বামীর দিকে চেয়ে, কথা বলল- “আমি তাহলে ব্যাগ ঘুছিয়ে ফেলি।”
“প্রফেসার সাহেব তার স্ত্রিকে সাহায্য করার জন্য চলে গেল।”

এয়ারপোর্টে যাওয়ার পথে তাদের মধ্যে কথা চলতে থাকে। এক সময় তারা এয়ারপোর্টে পৌছে যায়। সেখানে তাদের সাথে যোগ দেয় আরো আটজন। প্রফেসরের মুখে উজ্জল হাসি আর তার মুখে নতুন কিছু আশা।
প্রফেসর জেন্টের বিমানে উঠেই ডায়রিয়ার মত হয়েছে। শুধু প্রফেসর জেন্টকে বললে ভুল হবে কারণ তার স্ত্রির-ও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এটা একটা আজগুবি ব্যাপার যে তার আর তার স্ত্রির একই সমস্যা একসাথে হয়। তিনি প্লেনের খাবারের উপর দোষ দিতে লাগলেন। এমন সময় তাকে জানানো হল প্লেন থেকে এখনও খাবারই দেয়া হয় নি। একবার তিনি বাথরুমে যান, আর একবার তার স্ত্রি বাথরুমে যায়। প্লেনে তাদের শান্তি মত বসা হল না। প্লেন জারনি তাদের প্লেনের কোমটে বসে হল। প্রফেসার সাহেব সময় টাকে অপচয় করতে চাচ্ছেন না। তাই তিনি নিজের নুটবুকে লেখা শুরু করলেন। যা লেখলেন তার সবই তার মশ্তিকের উদ্ভট উদ্ভট ধারণা। তার মধ্যে এক নম্বরে আছে, গ্যালাক্সি দেবতা হাওয়া পরিবর্তনের জন্য আলোতে রূপ লাভ করে পৃথিবীর কল্যাণের জন্যে এসেছে।

অপর দিকে ক্রিক হিমানকে বিভিন্ন বিষয় শিখাচ্ছে। প্রথম পদক্ষেপ সাতার কাটা। তাকে সাতার শেখানোর জন্যে ঝরণায় সৃষ্ট জলাশয়ে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। হিমান প্রথমে পানি নামার পর বাংলা সিনেমার নায়িকাদের মত ডুবে যাওয়ার ভঙ্গি করলো। আর তাদের মত বাচাও বাচাও চিৎকারও করল।
ক্রিক সিনেমার নায়কের মত তাকে বাচালো। যদি এটা কোন সিনেমা হত তবে সেটার নাম হত- কঠিন প্রেম। ২য়বার পানিতে নামার পর তার পেন্টের ভেতর একটা চিকন সাপ প্রবেশ করল। তারপর কতক্ষণ তার উলংগ নিত্য। এ নিত্য দেখে যে কেউ বলবে এটা গ্রিনিচ ওয়াল্ড বুকে রেকর্ড করার মত।
সাতারের কিছু মূল্যবান প্রশিক্ষণ শেষে, তারা নেক্সট স্টেপে গেল। আর সে স্টেপটা হল গাছে চড়া। গাছে উঠার সময় হিমান শুধু মাটিতে পড়ে যচ্ছিল। কিন্তু সে তার মত চেস্টা করল। তারপর তারা একটা কাঠের ঘর তৈরি করল। হিমান অবাক হয়ে দেখল এত পরিশ্রম করার পরও তার ঘুম পচ্ছে না। ক্রিক তার হিডেন ব্যাগ থেকে কার্বলিক এসিড পুরু ঘরে ছড়িয়ে দিল যাতে সাপ না আসে।

হিমান লক্ষ্য করলো এখানে তার দিন ভালোই যাচ্ছে। তার এখন মনে হচ্ছে সে অনেক দিন ঘুমিয়েছে। হিমান শুনেছিল জংগল পশু পাখির আবাস কিন্তু তার এখন কোন পশু দেখা হয়। তবে দু-একটা পাখি তার দেখা হয়েছে। তার সামনে দু একটা পাখি এসে দুপুরের খাবার খেয়ে গেছে। আবার তারা যখন কাঠের ঘর বানাচ্ছিল তখন কয়েকটা পিপড়া দেখা গিয়ে ছিল। কিন্তু পিপড়াকে তো আর পশুর দলে ফেলা যায় না।

কাঠের ঘরটা তৈরি হয়েছে মোটামুটি অনেকটা ফাকা জায়গায়। চারপাশে গাছপালা আর মধ্যে কাঠের ঘর। কাঠের ঘরটা তৈরি করতে তাদের মাত্র একদিন লেগেছে। তবে তাই বলে তা দেখতে খারাপ হয়নি। ক্রিকের মুখে যে ভয়ংকর কথাটা হিমান শুনেছে সেটা হলো তাকে নাকি জংগলে বাথরুম করতে হবে। সেটা নিয়ে তার সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে। তার কাপড়টা হলো ফুল বডি সিলিকালাইজড সাথে সে একটা প্যান্ট পরে। এজন্য তার সবচেয়ে বেশী সমস্যা হয়।

৫

ক্রিক প্রায়ই গাছের পাতা-ডাল এসব দিয়ে মেয়ে সেজে এসে তার সামনে দাঁড়ায় আর তাকে বলে মেয়েদের সাথে কথা বলার প্রাকটিস করতে। সে আধাঘন্টা পর্যন্ত ভাবে, তারপর মেয়ে মুখোশধারী ক্রিককে বুলে- আমি হি-মা—ন-
“গুড।”
“আর আর”
“হ্যা হ্যা”
“আর আমি আমি”
“হ্যা এগিয়ে যাও।”
“আর আমি তোমার সাথে—কথা বলতে চাই।”
“ভালো।”
“তারপর?”
“তারপর আর কি?”
“কি কথা বলবে, সেটা বলব।”
“কি বলব?”
“কি কথা বলবে সেটা বলবে।”
ক্রিক হিমানের আ আ তে হতাশার একটা আওয়াজ করলো। রোবটটা বিরক্ত হয় না, তাদের কোন ফিলিং নেই। কিন্তু হিমানের কথাবার্তায় ক্রিকের রাগের মত হচ্ছে। কেন হচ্ছে কে জানে?
হিমান  ১০ মিনিটে মাত্র দু লাইন বলতে পারলো। ক্রিক তার দিকে অবাক হয়ে তাকাছে। তার চাহনির মধ্যে মানবিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ক্রিক হতাশার ভংগিতে বলল, “আমি সাজা মেয়ে আর আমার সাথে কথা বলতে তুমি এত সময় লাগাচ্ছ। আসল কেউ হলে কি করবে?
“তখন আমি ঠিক মত পারব।”
“কি পারবে? তুমি তো কিছুই ঠিকমত বলতে পারছ না।”
হিমানেরর দৃষ্টি সাভাবিক নয়। অসহায় অসহায় অবস্থা। ক্রিকের তার দিকে তাকিয়ে মায়া লাগছে। কেন লাগছে সে জানে না। সে তার নিজের মধ্যে কিছু অসাভাবিকতা লক্ষ্য করছে। তার শরীরের কোথাও বৈদ্যতিক তারতম্য সৃস্টি হয়েছে। এটাকেই কি অনুভব বলা হয়?

রিতি জানে সে কোন দুঃসপ্ন দেখলে থ্রিডি সিনেমার মত হয়। এটা তার মা না বললে সে নিজে কোন দিন জানতে পারতো না । তার নতুন বাবা আর নতুন ভাই তার দিকে ভয়ানক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তার সাধারণত লজ্জা হয় না। কিন্তু এখন তার লজ্জা লাগছে। সে নাকি দুনিয়া ফাটিয়ে চিৎকার করছিল। রিতি তার নানীকে অনেক মিস করছে। তার বাবা তাদের ছেড়ে যাওয়ার পর, তার  মা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়ে, তখন তার একমাত্র বন্ধু ছিল তার নানু। তার নানার অবস্থা তখনো খারাপ ছিল। কিন্তু তার নানু তাদের সামাল দিয়েছেন।
রিতিকে শান্ত করার জন্যেই হউক আর অন্য কোন কারনেই হউক, রিতির নতুন বাবা বলে উওঠলেন, “We are going to have a great exploration”। কথার ফাকে ফাকে ইংলিশ বলা খোরশেদ সাহেবের সভাব নয়, কিন্তু বিয়ে করার পর তার মধ্যে ভাব জমেছে। ২ বছর আগে তার স্ত্রী ক্যান্সারে মারা যান তাতে তার সংসার ভেংগে যায় নি। তিনি নিজে সংসার চালিয়েছেন। এখন তিনি আবার বিয়ে করেছেন। তিনি তার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসতেন, তিনি কি রিতির মাকে সে ভালোবাসা দিতে পারবেন? তার ভিতরে ভবিষ্যৎ নিয়ে কৌতুহল।

প্রফেসার জেন্টের প্লেন এয়ারপোর্টে এসে পৌছেছে। তার এয়ারপৌর্টের নাম বুঝতে অনেকক্ষণ লেগেছে। এয়ারপৌর্ট থেকে বের হয়ে এসে সে অনেকক্ষণ নামটার দিকে তাকিয়ে থাকল। শাহজালাল (রহঃ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এসব নাম তার কাছে খুবই আজব লাগে। এ দেশের নামটাও সে কখনও শুনেনি।
তারা এ দেশে যে পোশাকে এসেছে সেটা খুবই সাধারণ পোশাক। জেন্টের এপ্রন পরতে ইচ্ছা হচ্ছে। মানুষ যে জিনিশ সবসময় করে সে, সে জিনিশকে অতিক্রম করতে পারে না। সে খুব অবাক হয়েছেন যে এলিয়েনরা এসব দেশে আসে। তাকে যদি এখন কেউ বক্তৃতার জন্য মঞ্চে দাড়া করাতো, তবে এসব কথা বলে সে অনেকটা হালকা হতে পারতেন। তার স্ত্রি আবার অন্যের দোষ ধরা পছন্দ করে না। তাই তার পাশে বসা এসিস্টেনকেই যত পারল এ দেশ নিয়ে বলল। তাও তার স্ত্রির কারনে বেশি কিছু বলতে পারল না।

রিতি রেডি হলে তারা সবাই মিলে খেতে গেল। রিতি দেখল যে রেস্টুরেন্টে যারা খেতে গেছে সেটার নাম নির্জন নিরালা। নামটা রিতির কাছে মানান সই মনে হল না। কারণ হোটেলে কোন নির্জন কিংবা নিরালা পরিবেশ নেই। ওয়েটাররা সবাই ব্যাস্ত। তাদের কাছে আসার জন্য পর্যন্ত তারা টাইম পাচ্ছে না। অনেকক্ষণ পর একজন অর্ডার নিতে এল। কখন খাবার দিবে আল্লাহ মালুম। রিতি তার লিমিটের এডিশনের লাল রঙের ঘরিটাতে চেয়ে থাকল। কিন্তু অনেকক্ষণ চেয়ে খাকার পর বুঝল ঘড়িটি বন্ধ। সে ফাহিমকে জিজ্ঞাস করলো, “কয়টা বাজে।”
ফাহিম বলল, “সকাল ৯ টা বেজে ১৩ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড, ৩৯ সেকেন্ড, ৪০ সেকেন্ড…”
খাবার খেয়ে তারা একটা প্রাইভেট মাইক্রো ভাড়া করল। সেখান থেকে তাদের প্রোগ্রাম স্থানীয় একটা ঝরণার পাশ দিয়ে ভ্রমণ করা।
রিতি ভ্রমনে চারপাশের পরিবেশ লক্ষ্য করছে। ফাহিম মোবাইলে গেম খেলছে। তার প্রত্যেক গেমের শেষে হাই স্কোর হচ্ছে তাই সে বিরাট বিরাট চিৎকার দিচ্ছে। আধঘণ্টা পর তার বাবাই বাধ্য হলেন ফাহিমকে চুপ থাকতে বলতে। মাইক্রোটি মুটামুটি বড়। ৪টা বসার লেভেল। তারা বসেছে সেকেন্ড লেভেলে। প্রত্যেক লেভেলে চারজন করে বসা।
রিতির বাবা খবরের কাগজ পড়ছেন। দেশে নাকি জলদস্যুদের আগমণ হয়েছে। এসব আজগুবি কথা শুনলে খবরের কাগজ ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। এরা নাকি আবার মানুষদেরকে গুম করে ফেলছে। সারা পেপারে এসব বাজে খবরে ভর্তি। ভালো কোন খবর মনে হয় এদের ছাপাতে ইচ্ছা হয় না। খোরশেদ সাহেবের মতে, এরা মানুষের সুখ দেখতে পারে না।

ক্রিক হিমানকে মারামারির প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। হিমানের মুঠি অনেক শক্ত। তার এক ঘুষিতে যেন ক্রিকের নাট দুটা ডিলা হয়ে গেছে। তাই সে একটা বস্তা তৈরি করে তাতে বালি ভরে দিয়েছে সেটাতে ঘুশি মারার জন্য। এখন হিমান যত খুশি তাতে ঘুষি দেক। কোন সমস্যা নেই। এমন সময় তাদের কানে আজব আজব শব্দ শুনতে পেল। তাদের কুড়ে ঘরের কাছ থেকে শব্দটা আসছে। ক্রিক তাড়তাড়ি সেদিকে ছুটে গেল। ক্রিকের দেখাদেখি হিমানও সেদিকে ছুটে গেল। তারা যত তাড়াতাড়ি পারলো সেদিকে ছুটে গেল। দেখল একটা হাতির পাল তাদের ঘর মারাচ্ছে। তাদের আফসোছের সীমা থাকল না। তারা তাদের কষ্টের ঘরটা মারানো দেখলো। ঘরটা মারানো শেষে হাতি গুলো তাদের দিকে ছুটে আসছে। হিমান বলল, “ক্রিক?”
“কি?”
“”আমি যা দেখছি তুমিও কি তা দেখতে পাচ্ছ?”
“তুমি কি দেখচ্ছ?”
“হাতি গুলো আমাদের দিকে আসছে।”
“তাহলে নিশ্চিত থাক আমিও তাই দেখছি।”
“এখন তাহলে আমদের কি করা উচিত?”
“মনে হয় দৌড়ানো উচিত।”- ক্রিক হিমানকে আসস্ত করল।
“তাহলে চল দৌড়াই।”- তারা দুজনে দৌড় দিল। দুজন প্রায় দুদিকে দৌড় দিয়েছে। হাতি গুলো হিমানের পেছন দিক দিয়ে আসছে। সে জান বাজি রেখে দৌড়াচ্ছে। কিন্তু খুব শীঘ্রই সে পাহাড়ের শেষ সীমানায় এসে গেল। এখান থেকে লাফ দিলে তার বাচার কথা না। তাই তার সাহসও হল না এখান থেকে লাফ দেয়ার। সে সেখানে দাঁড়িয়ে গেল। তাকে এখন কিছু করতে হবে, না হলে হাতি গুলোর সাথে সেও নিচে পড়ে যাবে। সে সীমানায় হাত দিয়ে, পা ঝুলিয়ে রাখলো। হাতি গুলো এক এক করে খাদে পরতে লাগলো। সে নিচের দিকে আর তাকাতে পারছে না। “হাতির ভর্তা খেতে কেমন লাগে? নিশ্চই অনেক স্বাদের।”- হিমান চিন্তা করল।

এদিকে ক্রিক প্রান নিয়ে ছুটছে। তার পিছনে সে একবারও দেখেনি।
সে হঠাৎ থেমে গেল আর তখন সে স্পষ্ট বুঝতে পারছে সে হিমাঙ্কে হারিয়ে ফেলেছে আর সে নিজেও হারিয়ে গেছে। তারপর সে লক্ষ্য করলো তা কোন জিনিশই তার সাথে নেই। সব জিনিশ সে ঘরে রেখে এসেছিল। সে নিজেকে ইডিয়েট ছাড়া আর কোন গালি দিতে পারলো না। সে যদি এখন তাদের পৃথিবীতে থাকত তবে নির্ঘাত তাকে বহিস্কার করে দিত। মানুষ হলে সে কাদতে পারত কিন্তু সে মানুষ নয়। কিন্তু তাও তার শরীরের এক ছিদ্র দিয়ে কেন জানি পানি পরছে। (জায়গাটা খারাপ জায়গা। মানুষের এ জায়গা দিয়ে পানি বের হলে মানুষেরা তাকে প্রশ্রাব বলে।)

প্রফেসার জেন্ট তার স্ত্রীকে নিয়ে হোটেল রেডিসনে উঠেছেন। আজকের দিন এখনেই কাটাবেন। তারা যা আসছেন এটা যথাসম্ভব গোপন রাখা হয়েছে। দেশীয় কয়েকজনকে তাদের জন্যে ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোন বিশেষ কারনে তাদের আসতে বিলম্ব হচ্ছে। তারা এখানে এসেছে ট্যাকসি-ওয়ালার ইচ্ছাতে। এখন দেশীয় লোকেরা তাদের খোজ পায় কিনা সে নিয়ে তার নানা চিন্তা মাথায় হচ্ছে। সে নিজ দেশে বার বার ফোন করে তাদের অবস্থান জানাচ্ছে। যদিও সে তার দেশের গ্লোবাল নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানে। দেশীয় কাউকে তার খুব দরকার এখন। এজন্যই বার বার ফোন করা।
হোটেল রেডিসনে মুটামুটি ভালো সুবিধা। এমন একটা দেশে এত ভাল সুবিধা থাকার কথা না। তার চেহারায় এজন্যই একটু মুগ্ধতার ছাপ। তার স্ত্রিকে খুশী খুশীই দেখা যাচ্ছে, তাই তার মধ্যেও খুশী খুশী ভাব। এখন তার একটা একটা ওইস্কির প্রয়োজন। তার ওয়াইফের সাথে দিনটা সেলিব্রেটের দরকার আছে। তিনি তার স্ত্রিকে একা রেখে নিচে গেলেন ওইস্কি কিনতে। সেখানে তার ছিনতাই হলো। তিনি তার রুমে ফিরে এলেন শুধুমাত্র নিজের আন্ডারওয়ার পরিধান করে। তার স্ত্রী রুমের দরজা খুলে তার দিকে কতক্ষণ হা করে তাকিয়ে খাকল।

রিতির পরিবারের সাথে আরো তিনটি পরিবার যাচ্ছে। তাদের সবার যাত্রা হবে একসাথে।মাইক্রো চলছে আকাবাকা পথ দিয়ে।
ashikmokami
TheFirstObserver

Creator

Comments (0)

See all
Add a comment

Recommendation for you

  • Blood Moon

    Recommendation

    Blood Moon

    BL 47.6k likes

  • Silence | book 1

    Recommendation

    Silence | book 1

    LGBTQ+ 27.2k likes

  • Touch

    Recommendation

    Touch

    BL 15.5k likes

  • Secunda

    Recommendation

    Secunda

    Romance Fantasy 43.2k likes

  • What Makes a Monster

    Recommendation

    What Makes a Monster

    BL 75.2k likes

  • Silence | book 2

    Recommendation

    Silence | book 2

    LGBTQ+ 32.3k likes

  • feeling lucky

    Feeling lucky

    Random series you may like

ফেক্টরিয়াল জিরো
ফেক্টরিয়াল জিরো

1.6k views1 subscriber

Anthology stories bangla, Factorial Zero=1
Subscribe

20 episodes

আমি পৃথিবী থেকে এসেছি [4-5]

আমি পৃথিবী থেকে এসেছি [4-5]

77 views 0 likes 0 comments


Style
More
Like
List
Comment

Prev
Next

Full
Exit
0
0
Prev
Next