আমি পড়ার টেবিলে বসে অকাজ করছি। পেন্সিল দিয়ে টেবিলে আকিবুকি করছি। এমন সময় মা ডাক দিলেন, “রকু! ঔ রকু! এদিকে আয়।” আমি কোন সাড়া না দিয়ে আমার অকাজে মন দিলাম। এটা কেন করি আমি জানি না। এটা কার কাছ থেকে শিখেছি সেটা বলতে পারব, তিনি হলেন আমার কাকা। তিনি গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ। সারাদিন ডাকার পর যখন ওনার বাথরুম পাবে তখন এসে বলবে, কেন ডাকছিলে বল, আমার আবার খুব ২ নাম্বার পেয়েছে। আমি আমার পুরু জীবনে তাকে একবার মাত্র হাসতে দেখেছি। আর সে ঘটনায় আমার ডেঞ্জারাস একটা অভিজ্ঞতা আছে।
সালটা ঠিক মনে নেই; তবে বারটা ছিল শনি। কার শনি এটা খুব তাড়াতাড়ি জানা যাবে। আগে আমাদের অবস্থাটা বলি। বাবা তখন মুরগির ব্যাবসা করতেন। তার অনেক কর্মচারি। ব্যাবসায় তখন অনেক লাভ হয়েছে। বাবা টাকা ব্যাংকে না রেখে বাড়িতে এনে রেখেছেন। আমরা বিকেলে মামাকে দেখে অবাক হলাম। তিনি নাকি রাগ করে নিজের বৌকে তালাক দিয়ে, সব সম্পত্তি লিখে দিয়ে চলে এসেছেন। তার এখন থাকার জায়গা নেই তাই তিনি কিছুদিন আমাদের বাসায় থাকবেন। থাকার জায়গার ব্যাবস্থা হলে চলে যাবেন। আমার বয়স তখন নিতান্ত কম। মাত্র ক্লাস থ্রিতে পড়ি। বলা যায় আমার তখন এখনকার মত হুশ ছিল না। আমরা সেদিন রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েছি।
আমার যতদুর মনে আছে, আর যতটুকু আমি মার মুখ থেকে শুনেছি, ঘটনার সূত্রপাত রাত সাড়ে বারটায়। কে যেন আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। মা সর্ব প্রথম সজাগ হয়েছেন। তিনি আবার খুব অল্পতে ভয় পেয়ে যান আবার তার উপর রাত অনেক হয়েছে। এমন সময় কেউ আশা মানে আমাদের ভদ্র সমাজে তাকে ডাকাত বলা হয়। তাই মাও ভয়ে ভয়ে বাবাকে ডাকলেন। বাবা হা হু করে অনেক সময় নিয়ে দাড়ালেন। মা শুধু বলছে বাইরে ডাকাত এসেছে। বাবাও কথা গুলোর ভাল জবাব দিচ্ছেন। আমি তখন তাদের সাথে শুই। আমি মার ঘাবরানো শুনেই উঠে গিয়ে ছিলাম। মাকে লক্ষ্য করে দেখলাম মা কাদছে। কান্নাটা অনেকটা ফোপানো। আমার স্ত্রীও ফুপিয়ে কাদে। ব্যাপারটা বুঝা মুস্কিল। সম্ভবত বাইরে থেকে দরদাম করে যাদের এ বাড়িতে আনা হয় তারা সবাই এ শ্রেনীর অন্তর্গত। এটা বলছি এ জন্য যে আমার মার দুনিয়া উজার করে কাদা শুরু। যা হোক এখন মুল গল্পে ফিরে যাই। আমার বাবা ধীরে ধীরে দরজার দিকে এগুচ্ছেন। যদি এ সময় কেও ক্যামেরা দিয়ে দৃশ্যগুলো তুলতো এবং পড়ে দেখা হত তবে এটাকে একটা হিট হরর ফ্লিম বলে চালিয়ে দেয়া যায়। আমাদের মুটামুটি উন্নত পাশাপাশি তিনটা ঘর। যেটাতে আমরা থাকি সেটা সবচেয়ে ডান পাশে। মাঝেরটা অতিথিদের থাকার জন্য আর একদম বাম পাশেরটা যারা আমাদের বাড়িতে কাজ করে তাদের জন্য স্পেশাল ঘর। এ ঘরটা জমিলার জন্যই। জমিলা হল সেই ব্যাক্তি যাকে বাবা পেয়েছেন তার শশুর বাড়ির গিফট হিসেবে। সেই মার একমাত্র কাজের লোক। আর আমাদের এই তিন ঘরের সামনে একটা বিশাল বারান্দা। বারান্দা ফুল প্রটেকশন। মেইনগেট সেখানে অবস্থিত। বাবা ঘরের দরজা খুলে বারান্দায় এলেন। বাড়িতে শ্বশা-সম নিরাবতা। মার খুব কাছে শুয়া বলে আমি তার ফোপানো শুনছি আর বাবার দিকেও পলক না ফেলে তাকিয়ে আছি। বাবাই প্রথম তার বাচাল মুখ খুললেন। কে? জি আমরা। একটু দরজা খুলবেন আপনার সাথে একটা কথা ছিল। আর কাকা সেদিন বাসায় ছিল, ডাকাতরা কি করবে, তিনিই দা বিয়ে বের হলেন। এরপর যা হল তা হিস্টোরি, সেদিন কাকা হেসে ছিলেন।
Comments (0)
See all