“The answer you seek is beneath you The freedom it will bring, is 20 feet ahead.”
মানা তার ঘরের ফ্লোরেই খোড়া শুরু করল, এক ধরনের আজব বিষ্বাস যেন তাকে চেপে ধরেছে। আশাদের ইথার যেন তাকেও গাইড করছে। এক ফিট খুড়ল, ২ ফীট খুড়ল, এরকম করতে করতে ২০ ফীট খুড়ল যখন তার শাবলে একটা মেটালের দরজা টোং করে ঊঠল। সে হাত দিয়ে মাটি সরিয়ে দরজাটায় পুশ করল আর সেটা খুলে গেল। সে ভেতরে ঢুকে দেখল যানটা একটা স্পেসশীপ। সে স্পেসশীপটা অন করার পর সেটা তার বাড়ি ভেঙ্গে বের হল। সে যেন তার সামনে এক আজব জিনিশ দেখছে। সময় তার জন্য পেছনের দিকে চলছে। তার বাড়ি আবার জোড়া লাগল। তারপর আগের জায়গায় এল যখন শৃগালসরা মিদরিকে খাচ্ছিল। সে সময়ের একটু আগে গিয়েই মিদরিকে স্পেসশীপে ঢুকাল। তারপর তারা সময়ের আগে যাচ্ছে, দুজন একজন আরেকজনের হাত ধরে, সে গ্লাসে দেখল যানটার নাম, আরকু। যানটা এবার মহাকাশের দিকে যাচ্ছে, তারা দেখল কেউ একজন স্পেসশীপটাকে গ্রহটাতে নিয়ে আসছে। তারা এবার নিমা থেরকে দূরে যেতে লাগল। আর একটু পর মানা বুঝতে পারল, যানটা কোনদিকে যাচ্ছিল। তারা পৃথিবীর সামনে এসেছে, বড় একটা উল্কাকে পৃথিবী থেকে ফেরত যেতে দেখল। সময়ের অনেক আগে যাচ্ছে তারা, সময়ের অনেক আগে, ৯৯ হাজার বছর আগে, যখন পৃথিবীতে আর কোন মানুষ ছিল না। মানা তখন পৃথিবীতে অবতরন করল। সে বুঝল তাকে কি করতে হবে, সে এই পৃথিবীতে মানব জাতির শুরু করবে।
পর্ব ৮ ভূত
মানা আর মিদরির ডিএনএ মিক্স হয় নি, তাই মানাকে নিজের ডিএনএ দিয়েই শতাধিক ছেলে ও মেয়েকে ক্লোন করতে হয়েছে। এটা বেশি সময় ছিল না যখন সে ক্লোনের দুজন এ্কটি গোহার পাশে খেলছিল। হঠাৎ তাদের ইচ্ছা জাগল গোহার ভেতরে যেতে, আর হঠাৎ তাদের চোখের সামনে এক মানব অবয়ব ভেসে উঠল, দুজনেই ভয় পেয়ে খুব দ্রুত গোহা থেকে দৌড় দিল। মানা, তার ছেলেরা কি দেখে ভয় পেয়েছে সেটা দেখার জন্য গোহার ভেতরে আসল, প্রথমে সে কিছু দেখতে পেল না, পরে যখন একটু সামনে গেল সে অবয়বটা তার সামনে ভেসে উঠল, তার অবয়বটার চেহারা দেখে মনে হল সে যেন লোকটাকে চেনে। সে আরো ভালো করে দেখল, সে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না, অবয়বটা তারই, কিন্তু একটু বয়স্ক। তার প্রথমে মনে হয়েছে তার ছেলেরা হয়তো ভূত দেখেছে, কিন্তু এটা ছিল তারই একটা হলোগ্রাম। হলগ্রামটা তখন কথা বলতে শুরু করল, “ মানা, তুমি জেনে অবাক হবে যে তোমার অভিজান এখোনো শেষ হয় নি, বরং শুরু হয়েছে, আমি তোমার হলগ্রামটা এখানে রেখেছি তোমাকে এটা জানানোর জন্য, যেভাবে আমি আমাকে জানিয়ে ছিলাম। আর কয়েক বছর পরেই তোমার দেখা তাদের সাথে হবে, তখন তুমি তোমার জীবনের লক্ষ্যকে জানতে পারবে, তোমাকে তাদের কাছ থেকে আরকু চুরি করতে হবে, মনে রাখবে তারা কিন্তু সময়ের বিপরিত দিকে চলে।”
মানা বুঝতে পারল, তার জীবনের অনেক ধাপ এখনো তাকে পূরন করতে হবে, যতদিন জীবন আছে, ততদিন তার কোন অবসর নেই। জীবন তাকে বাধ্য করতে থাকবে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
পর্ব ৯ সূর্য ঊঠার অপেক্ষায় আরকুওকে চালানোর জন্য মানা উওইলটা ঘুরাল, কিন্তু এবার একটু ব্যাতিক্রম ঘটল, যানটা সময়ের সামনে চলতে থাকল। সে কি করবে ঠিক বুঝতে পারছে না, যানটা থামার কোন গতি দেখাচ্ছে না। সে আর কিছু না পেরে পাওয়ার সোর্সটা অফ করে দিল, আরকু ঘুরতে ঘুরতে মরুভূমির একটা প্রান্তরে এসে পরল। এবার সে আরকুওকে ঠিক ভাবে চালানোর জন্য ইঞ্জিন অনও করতে পারছে না। এখন বাইরে রাত, তাই সে সোলার পাওয়ারও ব্যবহার করতে পারবে না। সুতরাং তাকে অপেক্ষা করতে হবে সকাল পর্যন্ত। সে ভেতরের একটা কাপড় দিয়ে ছোট পুরো যানটা ঢাকল, তারপর দূরের একটা গোহার দিকে আসল রাত কাটাতে। গোহার কাছে গিয়েই সে আগুন দেখতে পেল, তিনজন যুবক সে গোহায় আগুনের সাথে বসে আছে, তাকে দেখে তারা তাদের সাথে যোগ দিতে বলল। তারা অবশ্য বিশাল দেহী, লাল চুল আর বেশ বড় মাথা। মানা তাদের তুলনায় সাইজে অনেক ছোট, মানা তাদের জিজ্ঞেস করল তারা এখানে এই মরুভূমির প্রান্তরে কি করছে। তাদের মধ্যে বাকা নাকওয়ালা জন বলল, আমরা এখানে আত্মহত্যা করতে এসেছি। মানার মনে হচ্ছে সে তার বাবার থেকে অন্তত বিশ হাজার বছর আগে আছে, এখানে মানুষ কেন আত্মহত্যার চিন্তা করবে? মানা তাদের জিজ্ঞাস করে জানতে পারল, তাদের সমাজের প্রধান নাকি তাদের শাস্তি হিসেবে আজীবন গোলাম বানিয়েছে, তাই তার সেখান থেকে ভেগে এসেছে। জীবন নাকি তাদের কাছে অস্বস্তিকর লাগছে, সাথে যদি তাদের ঐ প্রধান তাদের পায় তবে তাদের শরীরের চামড়া খসাবে। মানা তার নেকলেসটার কথা বলল, এটা সে নিমা নামক গ্রহ থেকে নিয়ে এসেছে। এটা দিয়ে সবার কথা বোঝা যায়। তারপর সে , নিমার কথা বলল তাদের, কিভাবে তারা তাকে ধর্ম দিয়ে গোলাম বানাতে চেয়েছে। সে স্বাধীন হয়ে সেখান থেকে চলে এসেছে, এক নতুন জীবন যাপন করার জন্য। মানা তাদের তিনজনের নাম জানল, সিগা, নাগ আর মিগি। তাদের চিনজনের মধ্যে সিগির বেশ কৌতুহল, সে মানাকে এই পৃথিবীর বাইরের জগৎ নিয়ে আরো জানতে চাইল। যখন সূর্য ঊঠল তখন সে তাদের তার স্পেসশীপটা দেখাল, তারা তিনজন দেখল কিভাবে তাদের চোখের সামনে আরকু যানটি গায়েব হয়ে গেল। তাদের আর অত্মহত্যার ইচ্ছা হল না।
পর্ব ১০ ব্লাকহোলে সুপার নোভা মানা নির্দেশ মোতাবেক ব্লাকহোলটার কাছে যাচ্ছে, কাছে থেকেও কাছে- আরো কাছে; সময় তার কাছে যেন থেমে যাচ্ছে, সে তার শরীরকে আস্তে আস্তে অদৃশ্য হতে দেখছে, কনায় কনায় তার শরীর গায়েব হয়ে যাচ্ছে। সে তাকিয়ে দেখছে তখনও যখন তার আর কোন কিছুর অবশিষ্ট নেই। এরপর সে নিজেকে আবিষ্কার করল নতুন কিছু রঙ্গে, আর তখন সে বুঝতে পারল সে নতুন একটি ইউনিভার্সে। আরকু তাকে এখানে আনতে সফল হয়েছে, সম্ভবত কিছু ক্ষতিকারক রেডিয়েশন থেকে বাচিয়ে, আর না হলে তাকে ক্যান্সারে মরতে হবে। এখান থেকে তাকে আরকুকে প্রথম চুরি করতে হবে এক প্রকৃতির উন্নত মানুষ উপস্থিতি থেকে, চুরি বললে দোষ হবে, এক ধরনের রিপ্লেসমেন্ট বলা যায়, পুরাতন আরকুটি এখানে রেখে নতুন আরকুটি নিয়ে যেতে হবে ধরা না পরে। এ জাওগায় সব কিছু সময়ের বিপ্রীতে চলে, এটা সম্ভবত তার জন্য সুবিধা, এটা চিন্তা করতে না করতেই সেখানে এনার্জী এক যায়গায় জমা হতে লাগল, তার বুঝতে দেরি হল না এটা এখানে সংঘটিত হওয়া সুপারনোভার পরের অবস্থা, এ এনার্জী এখানে জোড়া লেগে এখানে মারাত্মক গ্রাভিটি তৈরি করবে, যা তার গতিকে আরও ধীর করে দিবে, তাই তাকে এখান থেকে আরও তাড়াতাড়ি সরতে হবে। তাই সে তার গতি বাড়াল, একটি আজব গ্রহের দিকে, যার জন্য সে প্রস্তুত ছিল না কখনও।
পর্ব ১১ হামিং আর ইথার
মানার ভবিষ্যৎ যেন তাদের জন্য অতীত আর তাদের অতীত যেন মানার ভবিষ্যৎ। তাই মানাকে আরকু এমন ভাবে সরাতে হবে যাতে যানটি যে সে বদলাচ্ছে তার কোন প্রমাণ না থাকে। যানটি তার জন্য হবে পুরাতন কিন্তু এখানকার মানুষের জন্য হবে নতুন।। তার জন্য আরেকটি সমস্যা হচ্ছে সময় তার জন্য খুবই আস্তে যাচ্ছে, আর আরকুর বাইরে গেলেই তার জন্য সব সাইড এফেক্ট উম্মুক্ত হবে। এজন্য সে চিন্তা করছে আরকুর ভেতরে থেকেই কিভাবে সব কাজ করা যায়।
মানার চিন্তা হল এরা এমন একটি সিভিলাইজেশন যারা তার সময়ের উলটা দিকে চলে কিন্তু এমন যান বানিয়েছে যেটা তার সময়ের সাথে চলতে পারে। আরকু থেকে বের হুয়া মানেই তার জন্য কোন না কোন ভাবে মৃত্যু। তার সেই নিজের হলোগ্রামের কথা মনে পরল, সে নিজেকে বলছিল, সেই সিভিলাইগেশনের নাম হামিং, হামিং-রা বুড়ো থেকে জোয়ান হয়, এনার্জী এদের শরীরের ইথার থেকে ফল হয়ে পেট থেকে মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে। মানার মনে হতে থাকল, এক জগতের কল্পনা আর গল্প আরেক জগতের জন্য যেন সত্য। মানা যেন গ্রহটাতে নামতেই আরকু যানটিই নিজে থেকে ছোট হতে থাকল; অবশেষে যেটা থাকল সেটা ছিল আরকুর তাকে ঘিরে একটা অবয়ব। সে এই অবয়ব নিয়েই হামিং-দের আরকুতে ঢুকল, তখন যেন তাকে ঘিরে থাকা আরকু ফোটন হয়ে বাইরের একটা জায়গায় চলে এল আর সে হামিং-দের আরকুটি নিয়ে রউনা হল সময়ের শুরুতে, যখন এই ব্লাকহোল শূর্য ছিল। এক্মাত্র বিষ্ফোরনের সময় অর্থ্যাৎ সূর্য যে মূহুর্তে ব্লাকহোলে পরিনত হতে শুরু করবে একমাত্র তখনই সে নিজের ইউনিভার্সে ফেরত যেতে পারবে। এটাই সেই রেলিক, ইথার থেকে বের হয়ার স্পর্শ। হামিং-দের আরকুর সীতেই বইটা ছিল, ইথার। সে বইওটা খুলে দেখল এটাই নিমা গ্রহের আশাদের সেই ধর্ম-গ্রন্থ। বাইরে তখন সে গ্রহ ত্যাগ করার সময় দেখন এই গ্রহের শৃগালসদের, এদের পেটের ইথার থেকে হামিং-দের মাংস মুখ দিয়ে বের হয়ে হামিং-দের শরীরে যক্ত হচ্ছে।
সে যখন এই ইউনিভার্সের সময়ের শুরুতে গেল তখন ইথার বইটির যেন সব লেখা মুছে গেছে, যখন সে আবার নিজ সময়ে ফেরত এল ইথারে আবার সব লেখা ফেরত এল। মানা এখন নিমাতে ফেরত যাচ্ছে, তাকে এই আরকুটি তার নিজের ভবিষ্যৎ কিংবা অতীতের বাড়িতে রাখতে হবে। কথা হল সে ফেরত কিভাবে যাবে। তখন তার মনে এল, সে পৃথিবীওতে গিয়ে আরকুকে ফোটন ভাবে নিমাতে পাঠাতে পারবে, , সাথে ইথার-টিকেও।
Comments (0)
See all